চতুর্থ অধ্যায় পাঠ-৩ঃ আইপি অ্যাড্রেস, ওয়েব অ্যাড্রেস অথবা URL এর বিভিন্ন অংশ সমূহ।
- ১। আইপি(IP) অ্যাড্রেস ব্যাখ্যা করতে পারবে।
- ২। IPv4 এবং IPv6 এর মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে।
- ৩। ওয়েব অ্যাড্রেস বা URL এর বিভিন্ন অংশের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে পারবে।
আইপি অ্যাড্রেস(IP address): IP Address এর পূর্নরুপ Internet Protocol Address। ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কে যুক্ত প্রতিটি কম্পিউটার বা যন্ত্রের বা ওয়েবসাইটের একটি অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস বা ঠিকানা থাকে এই অদ্বিতীয় অ্যাড্রেসকে বলা হয় আইপি অ্যাড্রেস।
আইপি অ্যাড্রেস দুই প্রকার – IPV4 এবং IPV6
IPV4: IPV4 হলো Internet Protocol Version-4 । বর্তমানে IPV4 বহুল ব্যবহৃত আইপি অ্যাড্রেস। IPV4 এ প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেসকে প্রকাশের জন্য মোট চারটি অকটেট (৮ বিটের বাইনারি) অর্থাৎ মোট ৩২ বিট প্রয়োজন । প্রতিটি অকটেট ডট (.) দ্বারা পৃথক করা হয়। IPV4 দ্বারা মোট ২৩২ সংখ্যক অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস তৈরি করা যায়। IPV4 এর অ্যাড্রেস সাধারণত Decimal ফরম্যাটে লেখা হয়। প্রতিটি ভাগের ডেসিমেল সংখ্যাটি ০ থেকে ২৫৫ এর মধ্যের কোন একটি সংখ্যা হয়।
IPV6: IPV6 হলো Internet Protocol Version-6। IPV6 এ প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেসকে প্রকাশের জন্য মোট আটটি ভাগ থাকে এবং প্রতি ভাগে ১৬ বিট অর্থাৎ মোট ১২৮ বিট প্রয়োজন। প্রতিটি ভাগ ডট (.) দ্বারা পৃথক করা হয়। IPV6 দ্বারা মোট ২১২৮ সংখ্যক অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস তৈরি করা যায়। IPV6 এর অ্যাড্রেস সাধারণত Hexadecimal ফরম্যাটে লেখা হয়।
IPV4 এবং IPV6 এর মধ্যে পার্থক্যঃ
IPV4 | IPV6 |
১৯৮১ সালে আবিষ্কার। | ১৯৯৯ সালে আবিষ্কার। |
৩২ বিট অ্যাড্রেস। | ১২৮ বিট অ্যাড্রেস। |
২৩২ সংখ্যক অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস পাওয়া যায়। | ২১২৮ সংখ্যক অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস পাওয়া যায়। |
ডেসিমেল নোটেশন। | হেক্সাডেসিমেল নোটেশন। |
ওয়েব অ্যাড্রেস অথবা URL: প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি সুনির্দিষ্ট ও অদ্বিতীয় অ্যাড্রেস বা ঠিকানা রয়েছে যার সাহায্যে ইন্টারনেটে সংযুক্ত থেকে ওয়েব ব্রাউজারের সাহায্যে যেকোন জায়গা থেকে ঐ ওয়েবসাইটের পেইজগুলো ব্রাউজ করা যায়; সেই ঠিকানাকে ওয়েব অ্যাড্রেস বলে। ওয়েব অ্যাড্রেস URL নামেও পরিচিত। URL অর্থ Universal /Uniform Resource Locator । একটি ওয়েব অ্যাড্রেস বা URL এর কয়েকটি অংশ থাকে। চিত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হল-
- 1. Protocol (http)
- 2. Domain (www.edupointbd.com)
- Sub-domain (www)
- Domain Name (edupointbd)
- Top-level Domain (.com)
- Generic Domain (.com)
- Country Domain (say .bd)
- 3. Directory (/ict)
- 4. File Name or Document Name (robotics.html)
Protocol: প্রোটোকল হল কতগুলো নিয়মের সমষ্টি । উপরের URL এ http একটি প্রোটোকল যা HTML ডকুমেন্ট এক্সেস করা বা ওয়েব সার্ভার ও ক্লায়েন্টের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে। কিছু প্রোটোকলের উদাহরণ-
- HTTP – Hyper Text Transfer Protocol
- HTTPS- Hyper Text Transfer Protocol Secure
- FTP – File Transfer Protocol
- IP – Internet Protocol
- TCP- Transmission Control Protocol
ডোমেইন : ডোমেইন হচ্ছে একটি স্বতন্ত্র টেক্সট অ্যাড্রেস যা আইপি অ্যাড্রেসকে প্রতিনিধিত্ব করে। www.facebook.com এর পরিবর্তে 31.13.78.35 এই আইপি অ্যাড্রেস এর মাধ্যমেও facebook এর ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যায়। অর্থাৎ www.facebook.com ডোমেইনটি, আইপি অ্যাড্রেস 31.13.78.35 কে প্রতিনিধিত্ব করছে। মানুষ আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার না করে ডোমেইন ব্যবহার করে। কারণ আইপি অ্যাড্রেস সংখ্যাবাচক তাই মনে রাখা কষ্টকর কিন্তু ডোমেইন টেক্সট অ্যাড্রেস তাই মনে রাখা সহজ। উপরের URL এর www.edupointbd.com হলো ডোমেইন।
প্রতিটি ডোমেইনের তিনটি অংশ থাকে। যথা-
- ১। সাব-ডোমেইন
- ২। ডোমেইন নেইম
- ৩। টপ-লেভেল ডোমেইন(TLD)
সাব-ডোমেইনঃ সাব-ডোমেইন মূল ডোমেইনের অংশ যাকে তৃতীয় স্তরের ডোমেইনও বলা হয়। একটি ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন সেকশনে ভাগ করতে সাব-ডোমেইন ব্যবহৃত হয়। যেমন- www.google.com একটি ডোমেইন যার সাব-ডোমেইন হল maps.google.com। অর্থাৎ google এর maps সেকশনটি আলাদা করতে maps.google.com সাব-ডোমেইন ব্যবহৃত হয়।
টপ-লেভেল ডোমেইন(TLD): TLD দ্বারা প্রতিষ্ঠানের ধরণ এবং প্রতিষ্ঠানটি কোন দেশের তা বুঝা যায়। TLD এর দুইটি অংশ। জেনেরিক ডোমেইন এবং কান্ট্রি ডোমেইন।
জেনেরিক ডোমেইনঃ জেনেরিক ডোমেইন যা প্রতিষ্ঠানটির ধরণ নির্দেশ করে ।
জেনেরিক ডোমেইন | প্রতিষ্ঠানের ধরন |
.com | বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান |
.mil | মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত |
.gov | রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান |
.edu | শিক্ষা প্রতিষ্ঠান |
.net | নেটওয়ার্ক সার্ভিস |
.org | অলাভজনক প্রতিষ্ঠান |
.int | আন্তর্জাতিক সংস্থা |
কান্ট্রি ডোমেইনঃ ওয়েব অ্যাড্রেস এর একেবারে শেষের অংশ যা প্রতিষ্ঠানটি কোন দেশের তা নির্দেশ করে। কান্ট্রি ডোমেইন সকল ওয়েবসাইটের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়। যেমন- www.edupoint.com.bd । এই ওয়েব অ্যাড্রেস এর একে বারে শেষে bd লেখা আছে। অর্থাৎ এই ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশের নির্দেশ করে।
কান্ট্রি ডোমেইন | কান্ট্রি নেইম |
.bd | Bangladesh |
.uk | United Kingdom |
.us | United States |
.in | India |
.au | Australia |
.cn | China |
.ru | Russia |
.fr | France |
.ca | Canada |
Directory বা পাথঃ সার্ভার কম্পিউটারের একটি ফোল্ডার যেখানে ওয়েব পেইজগুলো অবস্থান করে। যেমন- উপরের URL এর ict হলো directory ।
ডকুমেন্ট নেইমঃ ওয়েব পেইজের বা ফাইল নেইম। যেমন – উপরের URL এর robotics.html হলো ওয়েব পেইজের বা ফাইল নেইম।
DNS সার্ভার: DNS সার্ভার এর পূর্নরুপ Domain Name System সার্ভার। আমরা যখন ব্রাউজারে কোন ওয়েব অ্যাড্রেস লিখে রিকুয়েস্ট করি, তখন ব্রাউজার প্রথমে ঐ ওয়েব অ্যাড্রেসের জন্য IP অ্যাড্রেস চেয়ে DNS সার্ভারে রিকুয়েস্ট পাঠায়। DNS সার্ভারে সকল ওয়েব অ্যাড্রেসের বিপরিতে IP অ্যাড্রেসগুলো সংরক্ষিত থাকে। তাই DNS সার্ভার ওয়েব অ্যাড্রেসের বিপরিতে IP অ্যাড্রেস ব্রাউজারকে রিটার্ন করে। তারপর ব্রাউজার ঐ IP অ্যাড্রেসের ওয়েব সার্ভারে ওয়েবসাইটের জন্য রিকুয়েস্ট পাঠায় এবং ওয়েবসাইটটি প্রদর্শিত হয়।
পাঠ মূল্যায়ন-
জ্ঞানমূলক প্রশ্নসমূহঃ
- ক। ওয়েব অ্যাড্রেস / URL কী?
- ক। আইপি(IP) অ্যাড্রেস কী?
- ক। ডোমেইন নেইম কী?
- ক। প্রোটোকল কী?
- ক। HTTP/HTTPS/FTP/TCP কী?
- ক। DNS সার্ভার কী?
অনুধাবনমূলক প্রশ্নসমূহঃ
- খ। ডোমেইন নেইম রেজিস্ট্রেশন করতে হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
- খ। ডোমেইন নেইমের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
- খ। ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেইম হওয়া উচিত প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্ত- ব্যাখ্যা কর।
- খ। ডোমেইন নেইমে WWW থাকে কেন? ব্যাখ্যা কর।
- খ। টপ লেবেল ডোমেইন ব্যাখ্যা কর।
- খ। টপ লেভেল ডোমেইন ব্যতীত ওয়েব অ্যাড্রেস সম্ভব নয়- ব্যাখ্যা কর।
- খ। “আইপি(IP) অ্যাড্রেস এর চেয়ে ডোমেইন নেইম ব্যবহার সুবিধাজনক”- ব্যাখ্যা কর।
- খ। 121.235.101.11 ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নসমূহঃ
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
গ। উদ্দীপকের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা কর ।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নসমূহঃ
১। সারা বিশ্বের ডোমেইন নেইম যে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করে সেটি হলো?
ক. ICANN খ. ICCNN গ. CCNA ঘ. ISDN
২। http এর পূর্ণরূপ কি?
ক. Hyper Text Tranmit Protocol খ. Hyper Time Tranmit Protocol
গ. Hyper Text Transfer Protocol ঘ. Hyper Term Transfer Protocol
৩। URL এর পূর্ণরূপ হলো?
ক. Uniform Resource Locator খ. Uniform Resource Line
গ. Unicode Resource Locator ঘ. Unique Resource Line
৪। http://www.bulbulcse.com এখানে bulbulcse দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ক. প্রোটোকল খ.ফাইল গ. ডোমেইন নেইম ঘ. ডিরেক্টরি
৫। E-mail ঠিকানায় @ চিহ্নের পরের অংশটি হলো-
ক. User Name খ. Domain Name গ. Host Name ঘ. Protocol
৬। সার্ভার ও ক্লায়েন্ট কম্পিউটারের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান হয় কোনটির মাধ্যমে?
ক. IP Address খ. Search Engine গ. html ঘ. http
৭। প্রতিটি ওয়েব অ্যাড্রেসের শুরুতে থাকে-
ক.www খ.http গ.html ঘ.FTP
৮। IP Address কত বিটের হয়?
ক. ৮ খ. ১৬ গ. ৩২ ঘ. ৬৪
৯। URL-এর অংশগুলো হলো-
i.প্রোটকল ii.হোস্টনেইম iii.ডাইরেক্টরি বা ফাইল নেইম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক.i ও ii খ.i ও iii গ. ii ও iii ঘ.i, ii ও iii
১০। কান্ট্রি ডোমেইন এর নাম-
i.ac ii.au iii.jm
নিচের কোনটি সঠিক?
ক.i ও ii খ.i ও iii গ.ii ও ii ঘ.i, ii ও iii
১১। https://www.facebook.com এখানে s কী নির্দেশ করে?
ক.Server খ.Security গ.Services ঘ.Save
১২। http://www.yahoo.com এর সর্বশেষ অংশটির নাম কী?
ক. প্রোটোকল খ. ডোমেইন নেইম গ. ফাইল নেইম ঘ. ডোমেইন প্রকৃতি
১৩। একটি আইপি অ্যাড্রেসকে প্রকাশের জন্য মোট কয়টি অকটেড প্রয়োজন?
ক. ২ খ. ৪ গ. ৮ ঘ. ৩২
১৪। ওয়েবপেইজের অ্যাড্রেস কে কি বলে?
ক. URL খ. HTTP গ. HTML ঘ. WWW
১৫। DNS এর পূর্ণরূপ কোনটি?
ক. Domain Name Server খ. Domain Name System গ. Domain Number System ঘ. Domain Number of Server
১৬। ডোমেইন নেইম হলো-
ক. ওয়েব সাইটের একটি স্বতন্ত্র নাম খ. সার্ভারের নাম গ. ওয়েব ফাইলের নাম ঘ. ফোল্ডারের নাম
১৭। www এর পূর্ণরুপ কী?
ক. World Wide Web খ. Word Wide Web গ. Wireless Wide Web ঘ. Wide Wireless Web