তৃতীয় অধ্যায় পাঠ-১৬ অ্যাডার (হাফ-অ্যাডার, ফুল-অ্যাডার)।

তৃতীয় অধ্যায় পাঠ-১৬ অ্যাডার (হাফ-অ্যাডার, ফুল-অ্যাডার)।

এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-

  • ১। অ্যাডার সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ২। হাফ-অ্যাডার সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৩। ফুল-অ্যাডার সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৪। হাফ-অ্যাডার এর সাহায্যে ফুল-অ্যাডার বাস্তবায়ন করতে পারবে।
  • ৫। বাইনারি অ্যাডার ব্যাখ্যা করতে পারবে।

অ্যাডার: যে সমবায় সার্কিট দ্বারা যোগ করা যায় তাকে অ্যাডার বা যোগের বর্তনী বলে। কম্পিউটারের সকল গাণিতিক কাজ বাইনারি যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। গুণ হলো বার বার যোগ করা এবং ভাগ হলো বার বার বিয়োগ করা। আবার পূরক পদ্ধতিতে বাইনারি যোগের মাধ্যমেই বিয়োগ করা যায়। কাজেই যোগ করতে পারার মানেই হলো গুণ, বিয়োগ এবং ভাগ করতে পারা। অ্যাডার দুই ধরনের। যথা:
  • ১। হাফ-অ্যাডার বা অর্ধযোগের বর্তনী
  • ২। ফুল-অ্যাডার বা পূর্ণ যোগের বর্তনী

হাফ-অ্যাডার বা অর্ধযোগের বর্তনী: যে সমবায় বর্তনী দুটি বিট যোগ করে একটি যোগফল(S) ও একটি ক্যারি(C) আউটপুট দেয় তাকে হাফ অ্যাডার বা অর্ধযোগের বর্তনী বলে।




হাফ অ্যাডার দুটি বিট যোগ করতে পারে। সুতরাং দুটি বিট দিয়ে চার ধরনের ভিন্ন ভিন্ন ইনপুট সেট তৈরি করা যায়। নিম্নে ভিন্ন ভিন্ন চার ধরনের ইনপুট সেট এর জন্য আউটপুট সত্যক সারণিতে দেখানো হলো-







সত্যক সারণি থেকে ইনপুটের সাপেক্ষে আউটপুট sum এবং carry এর আউটপুট ফাংশন পাই-




আউটপুট ফাংশন sum এবং carry এর সাহায্যে হাফ অ্যাডার এর লজিক সার্কিট –






শুধুমাত্র  মৌলিক গেইট ব্যবহার করে আউটপুট ফাংশন sum এবং carry এর সাহায্যে হাফ অ্যাডার এর লজিক সার্কিট –





  • শুধুমাত্র NAND গেইটের সাহায্যে হাফ-অ্যাডারের সার্কিট তৈরি বা বাস্তবায়ন কর। 
  • শুধুমাত্র NOR গেইটের সাহায্যে হাফ-অ্যাডারের সার্কিট তৈরি বা বাস্তবায়ন কর।

ফুল অ্যাডার পূর্ণ যোগের বর্তনীঃ যে সমবায় বর্তনী তিনটি বাইনারি বিট (দুটি ইনপুট বিট ও একটি পূর্বের ক্যারি বিট) যোগ করে একটি যোগফল(S) এবং বর্তমান ক্যারি(C0) আউটপুট দেয় তাকে ফুল অ্যাডার বা পূর্ণ যোগের বর্তনী বলে। ক্যারিসহ অপর দুটি বিট যোগ করার জন্য ফুল-অ্যাডার ব্যবহৃত হয়। আবার দুটি হাফ-অ্যাডার দ্বারা একটি ফুল-অ্যাডারের কাজ করা যায়।




ফুল অ্যাডার তিনটি বিট যোগ করতে পারে। সুতরাং তিনটি বিট দিয়ে আট ধরণের ভিন্ন ভিন্ন ইনপুট সেট তৈরি করা যায়। নিম্নে ভিন্ন ভিন্ন আট ধরনের ইনপুট সেট এর জন্য আউটপুট সত্যক সারণিতে দেখানো হলো-








সত্যক সারণি থেকে ইনপুটের সাপেক্ষে আউটপুট sum(S) এবং বর্তমান carry(C0) এর আউটপুট ফাংশন পাই-



ফুল অ্যাডারের আউটপুট ক্যারি (Co) নিম্নলিখিতভাবে সরলীকরণ করা যায়−



















  • শুধুমাত্র NAND গেইটের সাহায্যে ফুল-অ্যাডারের সার্কিট তৈরি বা বাস্তবায়ন কর। 
  • শুধুমাত্র NOR গেইটের সাহায্যে ফুল-অ্যাডারের সার্কিট তৈরি বা বাস্তবায়ন কর। 
  • মৌলিক ও যৌগিক গেইটের সাহায্যে ফুল অ্যাডার বাস্তবায়ন কর।

হাফ-অ্যাডারের সাহায্যে ফুল-অ্যাডারে বাস্তবায়ন: 
হাফ অ্যাডারের সাহায্যে ফুল অ্যাডার বাস্তবায়ন করার জন্য দুটি হাফ অ্যাডার ও একটি অর গেইট প্রয়োজন হয়।

প্রথম হাফ-অ্যাডারের ক্ষেত্রে-
S1=AꚚB  এবং
C1=A.B
দ্বিতীয় হাফ-অ্যাডারের ক্ষেত্রে-
S2=S1ꚚCi এবং
C2=S1.Ci
ফুল-অ্যাডারের যোগফল S ও আউটপুট ক্যারি C0 হলে-
S2=S1ꚚC এই সমীকরণে S1=AꚚB বসিয়ে পাই S2= AꚚBꚚC যা ফুল-অ্যাডারের যোগফল S । আবার C0=C1+C2 সমীকরণে C1 ও C2 এর মান বসিয়ে পাই C0=A.B+(AꚚB).Ci  যা ফুল-অ্যাডারের আউটপুট ক্যারি C0 । সুতরাং দুটি হাফ অ্যাডার ও একটি অর গেইটের সাহায্যে একটি ফুল অ্যাডার বাস্তবায়ন সম্ভব।
বাইনারি অ্যাডারঃ যে অ্যাডার দুটি বাইনারি বিট যোগ করতে পারে তাকে বাইনারি অ্যাডার বলে। বাইনারি অ্যাডার দুই প্রকার। যথা-
  1. প্যারালাল বাইনারি অ্যাডার
  2. সিরিয়াল বাইনারি অ্যাডার
প্যারালাল বাইনারি অ্যাডারঃ প্যারালাল বাইনারি অ্যাডার n বিটের দুইটি বাইনারি সংখ্যার বিটগুলোকে সমান্তরালে যোগ করতে পারে। শুধুমাত্র ফুল-অ্যাডার অথবা উভয় হাফ-অ্যাডার এবং ফুল-অ্যাডারের সাহায্যে প্যারালাল বাইনারি অ্যাডার সার্কিট তৈরি করা যায়। প্যারালাল বাইনারি অ্যাডার দিয়ে n বিটের দুইটি বাইনারি সংখ্যা যোগ করার জন্য একটি হাফ-অ্যাডার ও (n-1) সংখ্যক ফুল-অ্যাডার ব্যবহৃত হয়। তবে n বিটের দুইটি বাইনারি সংখ্যার যোগ শুধুমাত্র n সংখ্যক ফুল-অ্যাডার ব্যবহার করেও করা যায়। এক্ষেত্রে প্রথম ফুল-অ্যাডারের ইনপুট ক্যারিটি গ্রাউন্ডেড (ক্যারি জিরো) করে রাখা হয়।
প্যারালাল বাইনারি অ্যাডার বা বাইনারি অ্যাডারের সাহায্যে দুইটি বাইনারি সংখ্যা A4A3A2A1 এবং B4B3B2B1 এর যোগঃ
হাফ-অ্যাডার এবং ফুল-অ্যাডার ব্যবহার করে:   
শুধুমাত্র ফুল-অ্যাডার ব্যবহার করে:   
উদাহরণ-১: বাইনারি অ্যাডার সার্কিটের সাহায্যে 1101 এবং 1110 যোগ।

সুতরাং (1101)2 + (1110)2 = (11011)2
উদাহরণ-2: বাইনারি অ্যাডার সার্কিটের সাহায্যে 11011 এবং 10101 যোগ কর।
উদাহরণ-3: বাইনারি অ্যাডার সার্কিটের সাহায্যে 110 এবং 111 যোগ কর।

সিরিয়াল বাইনারি অ্যাডারঃ সিরিয়াল বাইনারি অ্যাডার n বিটের দুইটি বাইনারি সংখ্যার বিটগুলোকে বিট-বাই-বিট যোগ করে থাকে। একটি ফ্লিপ-ফ্লপ এবং একটি ফুল-অ্যাডার দিয়ে সিরিয়াল বাইনারি অ্যাডার সার্কিট তৈরি করা যায়। প্রতিটি ক্লক পালসে ফুল অ্যাডার সার্কিট দুইটি বাইনারি সংখ্যার একটি করে বিট যোগ করে sum এবং আউটপুট carry দেয়। পরবর্তী ক্লক পালসে পূর্ববর্তী আউটপুট ক্যারি এবং পরবর্তী দুইটি বিট যোগ করে  sum এবং আউটপুট carry দেয়। এইভাবে n বিটের দুইটি বাইনারি সংখ্যার বিটগুলোকে বিট-বাই-বিট যোগ করে থাকে।

পাঠ মূল্যায়ন- 

  • ক। অ্যাডার কী?
  • ক। হাফ-অ্যাডার কী?
  • ক। ফুল-অ্যাডার কী?
  • খ। “কম্পিউটার একটি পদ্ধতিতেই সব গাণিতিক কাজ করে থাকে”-ব্যাখ্যা কর।

ব্লক চিত্রগুলো লক্ষ কর এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:
গ। ব্লক চিত্র-১ মৌলিক গেইট দ্বারা যুক্তি বর্তনী অঙ্কন করে সত্যক সারণি ব্যাখ্যা কর।
ঘ। ব্লক চিত্র-১ দ্বারা ব্লক চিত্র-২ এর লজিক বর্তনী বাস্তবায়ন করা যায় কি না? বিশ্লেষণ করে মতামত দাও।

ব্লক চিত্রগুলো লক্ষ কর এবং নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:
ঘ। বাইনারি যোগের বর্তনী তৈরিতে চিত্রদ্বয়ের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)
To Top