প্রথম অধ্যায় পাঠ-৮: বায়োইনফরমেটিক্স ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।

প্রথম অধ্যায় পাঠ-৮: বায়োইনফরমেটিক্স ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।


এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-

  • ১। বায়োইনফরমেটিক্সের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ২। বায়োইনফরমেটিক্সের ব্যবহার বা প্রয়োগ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৩। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৪। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার বা প্রয়োগ ব্যাখ্যা করতে পারবে।

বায়োইনফরমেটিক্সঃ বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যেসব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো  ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দ্যেশ: 
  • ১। জৈবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুধাবন করা। অর্থাৎ জীন বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান করে জ্ঞান তৈরি করা।
  • ২। রোগ-বালাইয়ের কারণ হিসেবে জীনের প্রভাব সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করা।
  • ৩। ঔষধের গুণাগুণ উন্নত ও নতুন ঔষধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা করা।

একটি বায়োইনফরমেটিক্স যন্ত্র তিনটি প্রধান প্রক্রিয়া করে থাকে: 
  • ১। ডিএনএ ক্রম প্রোটিন ক্রম নির্ণয় করে (DNA sequence determines protein sequence )
  • ২। প্রোটিন ক্রম প্রোটিন গঠন/ কাঠামো নির্ণয় করে (Protein sequence determines protein structure)
  • ৩। প্রোটিন গঠন/ কাঠামো প্রোটিনের কাজ নির্ণয় করে (Protein structure determines protein function)

বায়োইনফরমেটিক্স এর ব্যবহার:
  • ১। প্যাটার্ন রিকগনিশন
  • ২। ডেটা মাইনিং
  • ৩। মেশিন ল্যাংগুয়েজ  অ্যালগোরিদম
  • ৪। ভিজুয়ালাইজেশন
  • ৫। সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট
  • ৬। ডিএনএ ম্যাপিং
  • ৭। ডিএনএ এনালাইসিস
  • ৮। জিন ফাইন্ডিং
  • ৯। জিনোম সমাগম
  • ১০। ড্রাগ নকশা
  • ১১। ড্রাগ আবিস্কার
  • ১২। প্রোটিনের গঠন

বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ওপেনসোর্স সফটওয়্যার সামগ্রীঃ 
Bioconductor, BioPerl, Biopython, BioJava, BioRuby, Biclipse, EMBOSS,Taverna Workbench, UGENE ইত্যাদি।

জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিংঃ কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশন (genetic modification /manipulation-GM) ও বলা হয়। ১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40 ও  lambda virus এর ডিএনএ এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।
প্রাণী বা উদ্ভিদ জীবের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচান বস্তু আছে যাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। ক্রোমোজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচান কিছু বস্তু থাকে যাকে ডিএনএ (DNA- Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। এই ডিএনএ অনেক অংশে ভাগ করা থাকে। এই এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীন বলা হয়। জীনই জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্য চারটিঃ
  • ১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা
  • ২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা
  • ৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা
  • ৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো

রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহঃ  
  • ১। DNA নির্বাচন
  • ২। DNA ওর বাহক নির্বাচন
  • ৩। DNA খণ্ড কর্তন
  • ৪। খণ্ডনকৃত DNA প্রতিস্থাপন
  • ৫। পোষকদেহে রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর
  • ৬। রিকম্বিনেন্ট DNA এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মূল্যায়ন।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহারঃ 
ইনসুলিন তৈরি, উন্নতমানের ফসল উৎপাদন, রোগের চিকিৎসা, হরমোন তৈরি, ভাইরাসনাশক, মৎস্য উন্নয়ন, ফারমাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন, টিকা ও জ্বালানি তৈরি, জেনেটিক ত্রুটিসমূহ নির্ণয়, পরিবেশ সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষতিকর দিকগুলোঃ 
  • ১। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ  যদি কোন কারণে ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাহলে এর প্রভাবে জীব জগতে বিপর্যয় নেমে আসবে।
  • ২। নিবেশিত জিন যদি ক্ষতিকর প্রোটিন সংশ্লেষণ করে তাহলে ক্যান্সার সহ নতুন রোগ হতে পারে।

পাঠ মূল্যায়ন- 

জ্ঞানমূলক প্রশ্নসমূহঃ
  • ক। বায়োইনফরমেটিক্স কী?
  • ক। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী?

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)
To Top