ষষ্ঠ অধ্যায় পাঠ-৯ কর্পোরেট ডেটাবেজ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজ।

ষষ্ঠ অধ্যায় পাঠ-৯ কর্পোরেট ডেটাবেজ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজ।

  • ১। কর্পোরেট ডেটাবেজ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ২। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজ এর ব্যবহার বর্ণনা করতে পারবে।

কর্পোরেট ডেটাবেজ: কর্পোরেট ডেটাবেজ হলো প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ের সেই ডেটাবেজ যা কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের বিভাগ বা অনুবিভাগ থাকে যেমন- উৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ, বিপনন, গ্রাহক সেবা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, আইটি, অডিট, গ্রাহক সেবা ইত্যাদি। উক্ত প্রতিষ্ঠানের আওতায় থাকা সকল ডেটার এক বিশাল সংগ্রহ থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তাদের কর্মী, ক্রেতা, সরবরাহকারি, অংশীদার এবং সরকারকে নির্ভুল ও সময়মতো তথ্য প্রদান করতে হয়। কর্পোরেট ডেটাবেজ এ কাজটিকে সহজ করে তোলে। কর্পোরেট ডেটাবেজে প্রতিষ্ঠানের তথ্যসমূহ সংরক্ষিত থাকে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন কাজের জন্য এ ডেটাবেজকে ব্যবহার করা হয়।
কর্পোরেট পর্যায়ে ব্যবহৃত জনপ্রিয় কিছু ডেটাবেজ সফটওয়্যার হলো-
(i)  Oracle
(ii) DB2
(iii) SQL Server
(iv) Sybase
(v) Teradata
(vi) ADABAS
(vii) MySQL
(viii) FileMaker
(ix) Access
(x) Inform-ix

সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজঃ সরকারি প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় উপাত্ত ও তথ্য সংরক্ষণের উপযুক্ত উপায় হলো সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডেটাবেজ তৈরি করা। শক্তিশালী সরকার পরিচালনা ব্যবস্থায় ডেটাবেজ হলো গুরত্বপূর্ণ একটি উপাদান। প্রতিটি সরকারের অধীনে থাকে অসংখ্য মন্ত্রণালয়। এসব মন্ত্রণালয় স্বতন্ত্রভাবে কিংবা অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিত উপায়ে কাজ করে থাকে। এসব কাজে তথ্যের ব্যবহার অপরিহার্য। এ তথ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও সুন্দর ও কার্যোপযোগী করে তুলতে পারে ডেটাবেজ।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজ এর ব্যবহারঃ  
১। অপরাধমূলক  কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তিবর্গের ছবিসহ ব্যক্তিগত নানা তথ্য, আঙুলের ছাপ ইত্যাদি সংরক্ষণ করে রাখতে পারে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। এর ফলে যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত, আঙ্গুলের ছাপ, রক্ত, ব্যবহৃত হাতিয়ার ইত্যাদি পরীক্ষা করে সহজে অপরাধী সনাক্ত করা যায়।
২। সরকারি নানা গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনাকারি প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করা, পরিসংখ্যান ব্যুরো, নির্বাচন কমিশন, ব্যানবেইজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করা, আদমশুমারি, কৃষিশুমারি, অর্থনৌতিক সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ, বিবাহ, তালাক প্রভৃতি রেজিস্ট্রেশন ও রেকর্ড সংরক্ষণ।
৩। জন্মহার ও মৃত্যুহার নির্ণয়, জন্ম-মৃত্যু রেকর্ড সংরক্ষণ, দুর্ঘটনার রেকর্ড সংরক্ষণ, আইন, আদালত, মামলা, অধ্যাদেশ ইত্যাদি সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ।
৪। তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে নাগরিকদের ছবিসহ ভোটার আইডি সংরক্ষণ, বাড়ির হোল্ডিং নম্বর, ভূমি ট্যাক্স, আয়কর,ফোন নম্বর সংরক্ষণ।
৫। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলোর ছাত্রদের ফলাফল ও তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এর ফলে আমরা যেকোনো সময় বিগত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল দেখতে পারি বা সংগ্রহ করতে পারি।
৬। শিক্ষার হার, পাসের হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ইত্যাদি সংরক্ষণ।
৭। ভূমি জরিপ, নানা ধরনের রেকর্ডের তথ্য সংরক্ষণ, সরকারি বিভিন্ন নথিপত্র ও জরিপ সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ, শহর বা গ্রামাঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন রেকর্ড সংরক্ষণ, জেলা, থানা বা এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ, সামরিক বাহিনীর ভূমি,  সরকারি বেসরকারি আয়-ব্যয়, রাজস্ব বা উন্নয়ন বরাদ্দ, বাজেট প্রভৃতি কাজে।
৮। তাছাড়া বর্তমানে অনলাইনে বিদেশ গমনেচ্ছুদের ডেটাবেজ সংরক্ষিত আছে। এর ফলে অতি সহজে নির্দিষ্ট পেশার বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিক নির্বাচন করা যায়। মোট উৎপাদন, বার্ষিক জিডিপি, গড় আয়, বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রভৃতি নিরূপণ ও সংরক্ষণ, স্টক মার্কেটে শেয়ার দর, কোম্পানি প্রোফাইল, কোম্পানি প্রসপেক্টাস, সূচক প্রভৃতি নির্ণয় ও সংরক্ষণ আয়কর, কাস্টম, আমদানিরপ্তানি,রেমিট্যান্স প্রভৃতি সংরক্ষণ। অর্থাৎ সার্বিকভাবে সরকারি পর্যায়ে ডেটাবেজ ব্যবহারের কারণে রাষ্ট্রের কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনা সম্ভব।

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)
To Top