দ্বিতীয় অধ্যায় পাঠ-১১ ক্লাউড কম্পিউটিং, ক্লাউড কম্পিউটিং এর বৈশিষ্ট্য, ক্লাউড কম্পিউটিং এর মোট সেবা, ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ, ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা সমুহ।
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
- ১। ক্লাউড কম্পিউটিং এর ধারণা সম্পর্কে জানতে পারবে।
- ২। ক্লাউড কম্পিউটিং এর বৈশিষ্ট্য জানতে পারবে।
- ৩। ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা সমুহ জানতে পারবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং- ক্লাউড কম্পিউটিং হলো এমন একটি বিশেষ পরিসেবা, যেখানে ক্রেতার তথ্য ও বিভিন্ন অ্যাপলিকেশনকে কোনো সেবাদাতার সিষ্টেমে আউটসোর্স করার এমন একটি মডেল যাতে নিম্নোক্ত ৩ টি বৈশিষ্ট্য থাকবে।
- ১। রিসোর্স স্কেলেবিলিটি
- ২। অন-ডিমান্ড
- ৩। পে-অ্যাজ-ইউ-গো
রিসোর্স স্কেলেবিলিটি: ছোট বা বড় যাই হোক ক্রেতার সব ধরণের চাহিদাই মেটানো হবে, ক্রেতা যত চাইবে সেবা দাতা ততোই অধিক পরিমানে সেবা দিতে পারবে।
অন-ডিমান্ড: ক্রেতা যখন চাইবে, তখনই সেবা দিতে পারবে। ক্রেতা তার ইচ্ছা অনুযায়ী যখন খুশি তার চাহিদা বাড়াতে বা কমাতে পারবে।
পে-অ্যাজ-ইউ-গো: এটি একটি পেমেন্ট মডেল। ক্রেতাকে আগে থেকে কোনো সার্ভিস রিজার্ভ করতে হবে না। ক্রেতা যা ব্যবহার করবে কেবলমাত্র তার জন্যই পেমেন্ট দিতে হবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং-এ বিবেচ্য বিষয়সমূহ:
- ১। গোপনীয়তা ও নমনীয়তা
- ২। বৈধতা ও উন্মুক্ততা
- ৩। গুনগত দিক ও নিরাপত্তা
- ৪। টেকসই
- ৫। ইনফরমেশন টেকনোলজির ব্যববহার
ক্লাউড কম্পিউটিং এর বৈশিষ্ট্য:
- ১। সাবলীলভাবে কাজের উন্নতি সাধন করে।
- ২। বিভিন্ন ধরণের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শেয়ার করা যায়।
- ৩। রিসোর্স শেয়ারে করে খরচ কমানো যায়।
- ৪। বিভিন্ন ডিভাইস ও জায়গায় ইটি ব্যবহার করা যায়।
- ৫। ভার্চুয়াল প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়।
- ৬। অধিক নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ
- ৭। এটির ধারণক্ষমতা অধিক ও রিসোর্স অধিক নিরাপদ
- ৮। এটি নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা করা সহজ
ক্লাউড কম্পিউটিং এর মোট সেবা ৫টি। তাহলো-
- ১। অবকাঠামোগত সেবা (Infrastructure as a service-IaaS)
- ২। প্লাটফর্মভিত্তিক সেবা (Plateform as a service-PaaS)
- ৩। সফটওয়্যার সেবা (Software as a service-SaaS)
- ৪। নেটওয়ার্ক সার্ভিস সেবা (Network as a service- NaaS
- ৫। কাউড ক্লায়েন্টস্ (Clude user as a Service- CuaS))
অবকাঠামোগত সেবা : ক্লাউড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের নেটওয়ার্ক, সিপিইউ, স্টোরেজ ও অন্যান্য মৌলিক কম্পিটউটিং রিসোর্স ভাড়া দেয়; যেখানে ব্যবহারী তার প্রয়োজনীয় অপারেটিং সিষ্টেম ও সফটওয়্যার চালাতে পারে।
প্লাটফর্মভিত্তিক সেবা: এই ব্যবস্থায় ক্লাউড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, অপারেটিং সিষ্টেম,ওয়েব সার্ভার, ডেটাবেজ, প্রোগ্রাম এক্সিকিউশন পরিবেশ ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে থাকে যাতে ব্যবহারকারী সহজে অ্যাপলিকেশন ডেভেলপ ও তা পরিচালনা করতে পারে।
সফটওয়্যার সেবা: এই ব্যবস্থায় ক্লাউড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যার ব্যবহারকারীগন ইন্টারনেটের মাধ্যমে চালাতে পারেন।
নেটওয়ার্ক সেবা: এই সেবাটি নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীকে আন্ত:ক্লাউড নেটওয়ার্ক বা ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি সুবিধা প্রদান করে। এটি ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক ও কম্পিউটার রিসোর্স অনুযায়ী ব্যবহারকারীকে রিসোর্স ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করে। যেমন- ব্যান্ডউইথ, ভিপিএন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ভার্চুয়ালাইজেশন ইত্যাদি।
ক্লাউড ক্লায়েন্ট সেবা: নেটওয়ার্ক ক্লায়েন্ট ডিভাইস এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীগন ক্লাউড কম্পিউটিং এ প্রবেশ করে। এক্ষেত্রে কম্পিউটার , ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয়। আমরা বিন্নি ধরনের ব্রাউজার ব্যবহার করে ক্লাউড কম্পিউটিং এ কাজ করতে পারি। যেমন:ফায়ার-ফক্স, গুগল ক্রোম
ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ-
- ১। পাবলিক ক্লাউড
- ২। কমিউনিটি ক্লাউড
- ৩। প্রাইভেট ক্লাউড
- ৪। হাইব্রিড ক্লাউড
পাবলিক ক্লাউড: পাবলিক অ্যাপলিকেশন,স্টোরেজ ও অন্যান্য রিসোর্সসমুহ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এই সেবা সাধারণত বিনা মুল্যে সরবরাহ করা হয়। যেমন: গুগল, অ্যামাজন।
কমিউনিটি ক্লাউড: সাধারণত কোনো বিশেষ শ্রেণীর জন্য যে কম্পিউটিং নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা করা হয় সেটি হবে কমিউনিটি ক্লাউড কম্পিউটিং। সাধারণত নিরাপত্তা ও আইনগত অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে এই ধরণের কম্পিউটিং করা হয় যা অভ্যন্তরীণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
প্রাইভেট ক্লাউড: যখনমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্লাউড সিষেটম ডেভেলপ করা হয় তখন তাকে প্রাইভেট ক্লাউড কম্পিউটিং বলে। এটিস সাধারনত অভ্যন্তরীণভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হয়। এখানে প্রবেমের জন্য সিকিউরিটি কোড এর প্রয়োজন হয়।
হাইব্রিড ক্লাউড: দুই বা ততোধিক ক্লাউডের সমন্বয়ে গঠিত ক্লাউডকে হাইব্রিড ক্লাউড বলে। এর ফলে অধিক পরিমান রিসোর্স শেয়ার করা যায়।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা সমুহ:
- ১। অপারেটিং খরচ তুলনামুলক কম থাকে।
- ২। নিজস্ব হার্ডওয্যার বা সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয় না ফলে খরচ কম।
- ৩। সার্বক্ষণিক ব্যবহার করা যায়।
- ৪। যেকোনো স্থান থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য আপলোড বা ডাউনলোড করা যায়।
- ৫। তথ্য বকভাবে প্রসেস বা সংরক্ষিত হবে তা জানার প্রয়োজন হয় না।
- ৬। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার আপডেট করা হয়ে থাকে।
- ৭। যেকোনো ছোট বা বড় হার্ডওয়্যার-এর মধ্য দিয়ে অ্যাপলিকেশন ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।
- ৮। সহজে কাজকর্ম মনিটরিং এর কাজ করা যায় ফলে বাজেট ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কর্মকান্ড পরিচালনা করা যায়।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধা সমুহ:
- ১। ডেটা, তথ্য অথবা প্রোগ্রাম বা অ্যাপলিকেশন এর উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
- ২। এটি দ্রুতগতি সম্পন্ন নয়।
- ৩। আবহাওয়াজনিত কারণে বা ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হলে সার্ভিস বিঘ্নিত হয়।
- ৪। ক্লাউড সাইটটিতে সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহারকারীরা তার সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হন।
- ৫। তথ্যের গোপনীয়তা ভঙ্গের এবং তথ্য পাল্টে যাওয়ার অর্থাৎ হ্যাকিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ৬। তথ্য ক্লাউডে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তা কোথায় সংরক্ষণ হচ্ছে বা কিভাবে প্রসেস হচ্ছে তা ব্যবহারকারীদের জানার উপায় থাকে না।