দ্বিতীয় অধ্যায় পাঠ -১ ডেটা কমিউনিকেশন, ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম-এর উপাদান, ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড ইত্যাদি।

দ্বিতীয় অধ্যায় পাঠ -১ ডেটা কমিউনিকেশন, ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম-এর উপাদান, ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড ইত্যাদি।

এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-

  • ১। ডেটা কমিউনিকেশনের ধারণা পাবে।
  • ২। ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেমের উপাদান সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
  • ৩। ডেটা ট্রান্সমিশন ও এর প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে পারবে।

ডেটা কমিউনিকেশনঃ কমিউনিকেশন শব্দটি Communicare শব্দ হতে এসেছে যার অর্থ to share(আদান-প্রদান/ বিনিময়)। সুতরাং একজনের সাথে আরেক জনের পরস্পর তথ্য বিনিময় বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে তথ্য বিনিময়ই হচ্ছে ডেটা কমিউনিকেশন।
সিস্টেম- কোনো নির্দিস্ট কাজ সহজে এবং সঠিকভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সুসংবদ্ধ রীতি-নীতিকে সিষ্টেম বলে।
ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেমঃ যে সিস্টেমে উপাত্ত বা তথ্যকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কিংবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইস এ একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত করে এবং সেই তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবহার করা যায়, তাকে ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে।

ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেমএর উপাদান ঃ 
উৎস: যে ডিভাইস হতে ডেটা পাঠানো হয় তাকে উৎস বলে। যেমন- কম্পিউটার, টেলিফোন।
প্রেরক: ডেটাকে উৎস থেকে একটি মাধ্যমের মধ্য দিয়ে প্রাপকের কাছে প্রেরণ করে। এর কাজ হচ্ছে ডেটাকে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ট্রান্সমিশন সিস্টেমের মধ্য দিয়ে প্রেরণের উপযোগী করে রুপান্তর করা এবং ডেটার নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনে  একে এনকোড করা। যেমন: মডেম। মানুষের ভাষাকে কম্পিউটারের/মেশিনের ভাষায় পরিনত করাকে এনকোড বলে।
মাধ্যম: যা উৎস ও গম্ভব্য ডিভাইসকে যুক্ত করে এবং যার মধ্য দিয়ে ডেটা স্থানান্তর হয় তাকে মাধ্যম বা কমিউনিকেশন চ্যানেল বলে। মাধ্যম দুই ধরণের হতে পারে। যেমন: তার মাধ্যম এবং তারবিহীন মাধ্যম।
প্রাপক: কমিউনিকেশন সিস্টেমে যার কাছে ডেটা পাঠানো হয় তাকে প্রাপক বা গ্রাহক বলে। গ্রাহকের কাজ হচ্ছে ট্রান্সমিশন সিস্টেম থেকে ডেটা সিগনাল গ্রহন করা এবং এ সিগনালকে গন্তব্য ডিভাইসের বোধগম্য(ডিকোড) করে উপস্থাপন করা।কম্পিউটারের/মেশিনের ভাষাকে মানুষের ভাষায় পরিনত করাকে ডিকোড বলে।
গন্তব্য: যার উদ্দেশ্য বা যে যন্ত্রে ডেটা পাঠানো হয় অর্থাৎ ট্রান্সমিশনের পর ডেটা সর্বশেষ যে স্থানে রাখা হয় তাই গন্তব্য বলে। যেমন- কম্পিউটার।
ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিডঃ প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমান ডেটা ট্রান্সফার হয় অর্থাৎ ডেটা ট্রান্সফারের হারকে ব্যান্ডউইথ বলে।একে  ট্রান্সমিশন স্পিড ও বলা হয়। এই ব্যান্ডউইথ সাধারণত Bit per Second (bps) এ হিসাব করা হয়। বাইনারী ডিজিট ০ এবং ১ কে বিট বলে। একে b দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
  • ১ বাইট = ৮ বিট
  • ১ কিলোবাইট = ১০২৪ বাইট
  • ১ মেগাবাইট = ১০২৪ কিলোবাইট
  • ১ গিগাবাইট = ১০২৪ মেগাবাইট
  • ১ টেরাবাইট = ১০২৪ গিগাবাইট
একক সময়ে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটার বা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ডেটা স্থানান্তরের হারকে      ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড বলে। 58 kbps বলতে বোঝায় প্রতি সেকেন্ডে 58 কিলোবিট ডেটা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তরিত হয়।

এই ডেটা ট্রান্সফার গতির উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
  1. ন্যারো ব্যান্ড : ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড ৪৫ থেকে ৩০০bps। টেলিগ্রাফিতে ন্যারো ব্যান্ড ব্যবহিত হয়।
  2. ভয়েস ব্যান্ড: ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড ৯৬০০ bps। টেলিফোনে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া কম্পিউটার থেকে প্রিন্টার বা কার্ড রিডারে ডেটা স্থানান্তরে ব্যবহৃত হয়।
  3. ব্রড ব্যান্ডডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড কমপক্ষে ১ Mbps। সাইবার লাইন(ডিএসএল), রেডিও লিংক, মাইক্রোয়েভ, স্যাটেলাইট, ফাইবার অপটিকস্ ব্যবহৃত হয়।

পাঠ মূল্যায়ন-

  • ক। ডেটা কমিউনিকেশন কী?
  • ক। ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম কী?
  • ক। চ্যানেল কী?
  • ক। ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড অথবা ব্যান্ডউইডথ কী?

  • খ।  ব্যান্ডউইডথ 58 kbps বলতে কী বোঝায়?
  • খ। ৯৬০০ bps ব্যাখ্যা কর।

উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও-
মোকাররম সাহেব মেট্রোপলিটন এরিয়ার বিভিন্ন অফিসে ক্যাবল মাধ্যমে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ক্সতরি করেন এবং তিনি তার হেড অফিস হতে শাখা অফিস নিয়ন্ত্রণ করেন। এতে তার ডেটা স্থানান্তর খুব ধীর হয়ে থাকে। যার ডেটা স্পিড ৩০০bps। কিন্তু তিনি জানতে পারলেন বাংলাদেশে রেলওয়ে সারা দেশের সকল রেলস্টেশনে পরিবেশ বান্ধব বিশেষ তারের মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত ডেটা আদান প্রদান হয়ে থাকে। মোকাররম সাহেব তার নেটওয়ার্ক ক্যাবল পরিবর্তন করে রেলওয়ের মতো করার চিন্তা করেন।
গ. উদ্দীপকে মোকাররম সাহেবের সমস্যার কারণ চিহ্নিতপূর্বক ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. উদ্দীপকে মোকাররম সাহেবের সিদ্ধান্ত কতটুকু ফলপ্রসু হবে বলে তুমি মনে কর? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
গ। ডেটা ট্রান্সমিশন অর্থাৎ ডেটা এক স্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার গতিকে ব্যান্ডউইডথ বলে। ব্যান্ডউইডথ কম হলে ইন্টারনেট থেকেডেটা পেতে বেশি সময় লাগে বা পাওয়া যায় না। ন্যারো ব্যান্ড ৪৫ থেকে ৩০০ bps পর্যন্ত ডেটা যায়। ভয়েস ব্যান্ডে সর্বোচ্চ ৯৬০০bps
পর্যন্ত ডেটা ট্রন্সমিশন হতে পারে। ব্রডব্যান্ডে ১Gbps হতে আরো উচ্চ গতি পর্যন্ত ডেটা ট্রান্সমিশন হতে পারে। এই ধরনের ব্যান্ড দিয়ে বেশি ডেটা মুহূর্তেই ট্রান্সমিট হয়। উদ্দীপকের আলোকে মোকাররম সাহেবের ইন্টারনেট স্পিড ৩০০bps থাকায় আমরা বলতে পারি তিনি ন্যারো ব্যান্ডে ব্যবহার করার ফলে উপরোক্ত সমস্যায় পড়েছেন।
ঘ। যার মধ্য দিয়ে ডেটা এক স্থান হতে অন্য স্থানে বা এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তরিত হয় তাকে ডেটা কমিউনিকেশন মাধ্যম বলা হয়।ক্যাবলের সাহায্যে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ক্সতরি করার জন্য কো-এক্সিয়াল ক্যাবল, টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল বা অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কো-এক্সিয়াল ক্যাবলের সাহায্যে ডেটা প্রেরণের স্পিড বেশি থাকলেও সর্বোচ্চ ১km বেশি ডেটা প্রেরণ করা যায় না। টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের মাধ্যমেও ১০০m দূরুত্বে বেশি ডেটা প্রেরণ করা যায় না কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের সাহায্যে আলোর বেগের সমতুল্য ডেটা স্পিড ২Gbps পর্যন্ত প্রেরণ করা যায়। উক্ত মতে মোকাররম সাহেব তার বিভিন্ন অফিসের নেটওয়ার্ক সাধারণ ক্যাবলের পরিবর্তে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করেন।

উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও– 
গ. প্রবাহ চিত্রটির ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ডেটা ট্রান্সমিশনে (২) ও (৪) নং এর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। 

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)
To Top